নিজস্ব সংবাদদাতা, ৮ জুন; ২০২৩: বুধবারই রাজ্যের নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাজীব। এক সময়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের পদে ছিলেন। এরপর কমিশনার পদে শপথ গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করে দিলেন রাজীব সিংহ। রাজ্য এক দফায় পঞ্চায়েত ভোট । আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হবে রাজ্যে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ সাংবাদিক বৈঠক করে দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। মাঝে সময় এক মাস । যদিও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, একটিও সর্বদল বৈঠক না ডেকে, কোনও আলোচনা না করেই এক তরফা ভোটের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। কমিশনের দাবি, সর্বদলীয় বৈঠক করে ভোটের দিন ঘোষণার নিয়ম নেই। যখন প্রয়োজন হবে বৈঠক হবে।
বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে দ্বিস্তর এবং বাকি রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ৮ জুলাই । মনোনয়ন জমা শুরু আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার ৯ জুন থেকে।’’ রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাচ্ছে। ফলে রাত ১০টা থেকে সকাল ৮ পর্যন্ত মিটিং মিছিল করা যাবে না।
পঞ্চায়েত ভোটের তারিখ নিয়ে দীর্ঘ জল্পনা চলছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার ভোটের দিন ঘোষণা করেছেন নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ । তিনি জানিয়েছেন, ৯ জুন থেকে মনোনয়ন জমা শুরু এবং ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। ১৭ জুন স্ক্রুটিনির শেষ দিন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য ২০ জুন পর্যন্ত সময় পাবেন পঞ্চায়েত প্রার্থীরা। ভোটগণনা বা ফল ঘোষণা কবে তা জানতে চাওয়া হলে রাজীব সিংহ প্রথমে জানান, সাধারণত ভোটগ্রহণের ১-২ দিন পরে। এক্ষেত্রেও নিয়ম অনুযায়ী করা হবে। পরে কমিশন সূত্রে জানা যায়, আগামী ১১ জুলাই গণনা হতে পারে। ২০১৮ সালের মতো এবছরও এক দফাতেই হবে রাজ্যের ২২টি জেলার পঞ্চায়েত ভোট। পশ্চিমবঙ্গে মোট ২২টি জেলায় ৩৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে । গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৫৯৪। মোট পঞ্চায়েত আসন ৬৩ হাজার ২৮৩টি। আগামী ৮ জুলাই, শনিবার এই ৬৩ হাজার ২৮৩টি আসনে এক দফাতেই ভোট গ্রহণ করা হবে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে করানোর দাবি করেছিল বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে রাজীব সিংহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা রাখা উচিত। আমাদের উপর আস্থা রাখুন। প্রস্তুতিতে কোনও গাফিলতি থাকবে না। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বলব আস্থা রাখতে।’’
বিগত দু’টি পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক হিংসার উদাহরণ রয়েছে বাংলায়। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সহ অন্যান্য প্রায় সব তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক দলই পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করার দাবি তুলেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভোটে সুরক্ষায় রাজ্য পুলিশ নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন? জবাবে কমিশনার রাজীব সিনহা জানান,
রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অনলাইনে প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশের বিষয়টিও বিবেচনাধীন বলে জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।
অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের । সদ্য নয়া কমিশনার নিয়োগ হয়েছেন। তবে আমি ভোট নিয়েই কোনও কিছু বলব না।’ তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন,
‘পঞ্চায়েত ভোটকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। যে পরিষেবা গত পাঁচ বছরে মানুষ পেয়েছেন তাতে আমরা নিশ্চিৎ যে তৃণমূলকেই ভোটাররা বেছে নেবেন।’
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে গতকাল
বুধবারই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছিল । আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, আগামী এক মাসের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। সেক্ষেত্রে ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট করতে সম্মত হয় উভয় পক্ষ। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, ‘নব জোয়ার কর্মসূচির পরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হবে।’
0 Comments